Social Icons

Pages

Featured Posts

Thursday, April 25, 2013

"পা ছুয়ে সালাম"/"কদমবুসীর রীতি"


[বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন]

পা ছুয়ে সালাম করা অমুসলিমদের কাজ। আর তা সালাম নয়, তা আসলে প্রনাম। সুতরাং তা মুসলিমদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহ ছাড়া কারও জন্য মাথা নত করা বৈধ নয়। সালাম ও মুসাফাহাহ করার সময় মাথা নত করা বৈধ নয়। সালামের পর বিশেষ শ্রদ্ধাভাজনের দুই চোখের মাঝে কপালে চুম্বন করা বৈধ। জাফর (রাঃ) হাবশা থেকে ফিরে এলে রাসুল(সাঃ) তার সাথে মুআনাকা করে তার দুই চোখের মাঝে কপালে চুম্বন দিয়েছিলেন।
***ইবনে উসাইমিন; সিলসিলাহ সহিহাহঃ ৬/১/৩৩৮।

"মুসলিমদের সালামের রীতি-নীতি"

মুসলিমদের সালামের রীতি-নীতি হলঃ "সালামুন আলাইকুম বা আসসালামু আলাইকুম" এবং তার উত্তরে অনুরুপ করার বিধান আল্লাহই দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেনঃ
"আর যখন তারা আপনার কাছে আসবে যারা আমার নিদর্শনসমূহে বিশ্বাস করে, তখন আপনি বলে দিনঃ তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তোমাদের পালনকর্তা রহমত করা নিজ দায়িত্বে লিখে নিয়েছেন যে, তোমাদের মধ্যে যে কেউ অজ্ঞতাবশতঃ কোন মন্দ কাজ করে, অনন্তর এরপরে তওবা করে নেয় এবং সৎ হয়ে যায়, তবে তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, করুণাময়"।
***সুরা আল-আনআমঃ আয়াত-৫৪।

সালাম একটি প্রাচীন সুন্নাত যা আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু হয়ে কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হওয়া অবধি বিদ্যমান থাকবে। ইহাই জান্নাত বাসীদের শুভেচ্ছা। আর জান্নাতে তাদের শুভেচ্ছা হবে সালাম-শান্তি। ইহা নবী-আম্বিয়াদের সুন্নাত, মুত্তাকীদের স্বভাবগত গুণ, খাঁটি মুমিনদের বৈশিষ্ট্য।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না মুমিন না হওয়া পর্যন্ত। আর তোমরা মুমিন হবে না যতক্ষণ না পরস্পরকে না ভালবাসবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন পদ্ধতির কথা বলে দিব না যা করলে তোমরা পরস্পরকে ভালবাসতে পারবে? তা হল, তোমাদের মধ্যে বেশী বেশী করে সালাম প্রচার ও প্রসার করবে।” ***মুসলিম।
বুখারী ও মুসলিমের যৌথ বর্ণনায় এসেছে: “এক ব্যক্তি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন: ইসলামের কোন বৈশিষ্ট্য সর্বোত্তম? তদুত্তরে তিনি বলেন: তুমি খাবার খাওয়াবে এবং যাকে চেন অথবা চেন না সবাই (মুসলিম)কে সালাম প্রদান করবে।***মুত্বাফাক আলাইহ।

সালামের পদ্ধতি:

ইমাম নাওয়াভী বলেন: সালামের সর্বনিম্ন শব্দ হল: (السلام عليكم) আসসালামু আলাইকুম বলা। যাকে সালাম দেয়া হচ্ছে সে যদি একক ব্যক্তি হয়, তবে তার জন্য সর্ব নিম্ন শব্দ হল: (السلام عليك) আসসালামু আলায়কা বলা। তবে এক্ষেত্রে উত্তম হল (السلام عليكم) বলা যাতে করে এ সালাম তাকে ও তার দুই ফেরেশতাকেও শামিল করে। এর চেয়েও পূর্ণাঙ্গরূপ হল: (ورحمة الله) ওয়া রহমাতুল্লাহ বৃদ্ধি করে বলা, অনুরূপ ভাবে (وبركاته) ওয়া বারাকাতুহু শব্দ বৃদ্ধি করে বলা আরও উত্তম। যদি কেউ (سلام عليكم) সালামুন আলাইকুম বলে তবুও তা তার জন্য যথেষ্ট হবে।

সালামের জবাব:

ইমাম নাওয়াভী বলেন: সালামের জওয়াব দেয়ার সর্বোত্তম ও পূর্নাঙ্গ পদ্ধতি হল: ( وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته)ওয়া আলাইকুমাসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহে ওয়া বারাকাতুহ্‌ বলা। অর্থাৎ আলাইকুম, এর পূর্বে (و) ওয়াও অক্ষরটি উল্লেখ করবে। তা বাদ দিলেও জায়েজ আছে তবে সেটা উত্তম পদ্ধতি হবে না। কেউ যদি সালামের জবাবে শুধু ওয়া আলাই কুমুস্‌ সালাম বলে তবে তা যথেষ্ট হবে। তবে যদি শুধু (عليكم) আলাইকুম বলে তবে সকল বিদ্বানের নিকটেই তা যথেষ্ট হবে না।

"পা ছুয়ে সালাম/কদমবুসীর রীতি"

আমাদের সমাজে অনেকেই মুখে সালাম দেওয়ার চেয়ে কদমবুসীকে বেশি গুরুত্ব প্রদান করেন। অনেকে আবার কদমবুসীকে সালাম করা বলি। অনেকে মুখে সালাম করি-না শুধু কদমবুসী করি।

অথচ একজন মুসলমানের সাথে অন্যের দেখা হলে মুখে সালাম দেওয়া ও উত্তর প্রদান করা ইসলামী সুন্নাত। রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর দরবারে তাঁর ২৩ বৎসরের নবুয়াতী জীবনে তাঁর লক্ষাধিক সাহাবীর কেউ কেউ দুই একবার এসেছেন। কেউ কেউ সহস্রাধিকবার এসেছেন। এসকল ক্ষেত্রে তাঁদের সুন্নাত ছিল সালাম প্রদান।

কখনো কখনো দেখা হলে তাঁরা সালামের পরে হাত মিলিয়েছেন বা মুসাফাহা করেছেন। দু' একটি ক্ষেত্রে তাঁরা একজন আরেকজনের হাতে বা কপালে চুমু খেয়েছেন বা কোলাকুলি করেছেন।

আবু বাকার, উমার, উসমান, আলী, ফাতিমা, বিলাল (রা.) ও তাঁদের মত অগণিত প্রথম কাতারের শত শত সাহাবী প্রত্যেকে ২৩ বছরে কমপক্ষে ১০ হাজার বার রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর দরাবারে প্রবেশ করেছেন। কিন্তু কেউ কখনো একবারও রসূলুল্লাহ (ﷺ) কদম মুবারক চুমু খাননি বা সেখানে হাত রেখে সেই হাতে চুমু খাননি।